আবদুর রাজ্জাক:
কক্সবাজার শহরের বেশ কয়েকটি পানি চলাচলের নালা ইতিমধ্যে ভরাট আর দখলদারদের কবলে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনাকে পুঁজি করে পেশকার পাড়াস্থ বাঁকখালী নদীতে পানি যাওয়ার খালটি বন্ধ রয়েছে। এতে পাশপাশের বাঁকখালী নদীর তীর দখল হয়েছে অহরহ। এখন নতুন করে দখলবাজদের নজর পড়েছে খুরুস্কুল ব্রিজের আশপাশে। বলতে গেলেই ব্রিজের নিচে উভয় পাশে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে উভয় পাশের তিনভাগের একভাগ ভরাট করে দখল করা হয়ে গেছে। খুরুস্কুল ব্রিজের উভয় পাশই ময়লা-আবর্জনায়ও ফেলা হচ্ছে দখলের উদ্দেশ্যে। দখল হয়ে গেছে ব্রিজের উভয় পাশের জমিও। ফলে শহর এলাকা থেকে বাঁকখালীতে পানি নামতে পারছে না। এতে বৃষ্টি হলে পানি আটকে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই কক্সবাজার শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা ডুবে যায়।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, খুরুস্কুলের ব্রিজের নিচে দক্ষিণ পাশে ক্রমের ভরাট চলছে। এতোমধ্যে নদীর মাঝখানে চলে গেছে ভরাটের অংশ। আর ভরাট করা জায়গা তৈরি হচ্ছে বসত বাড়ি। অনেকেই ফিশিং বোট মেরামতের কাজও চালিয়ে যাচ্ছে। তীর দখল করে চলছে জাল তৈরির কাজও। একটি চক্র বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি সংগ্রহ করে ট্রাক নিয়ে ব্রিজের দক্ষিণ পাশে ফেলছে নিয়মিত। অনেক সময় নদী থেকেও মাটি তুলে ভরাট করা হচ্ছে তীর।এলাকাবাসী জানান, এসব এলাকায় পৌরসভার নালা-নর্দমাও সংকুচিত হয়ে গেছে। এছাড়া পুরো শহরের বৃষ্টির পানি বাঁকখালী নদীতে সহজে পতিত হতে পারে না। তার মধ্যে এখন বাঁকখালী নদীর তীর দখল হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে বৃষ্টি হলে শহরের নি¤œাঞ্চল কার্যত পানিবন্দী হয়ে থাকতে হয়। মাঝিরঘাট এলাকার লোকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে খুরুস্কুল ব্রিজের নিচে ভরাট চলছে। বিশেষ করে দক্ষিণ পাশে ভরাট করা হচ্ছে। পাহাড়ি মাটি ও আর্বজনা দিয়ে এসব ভরাট করা হয়। দখল করেই তাতে নির্মাণ করা হয়েছে ঘরবাড়ি, দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। রোপণ করা হচ্ছে গাছও। অনেকেই বেড়া দিয়ে রেখেছে। দাবি করছে নিজের ক্রয়কৃত জমি বলে। এতে নদীটি ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে। পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতিও পরিবর্তন হচ্ছে। যার কারণ অন্যদিকে তীর ভাঙছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রপ্ত) মাহাবুবুর রহমান বলেন, বাঁকখালী নদীতে পানি যাতায়াতের মাধ্যম হওয়ায় নদীটি হয়তো আর্বজনা জমে ভরাট হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি হলে সব ঠিক হয়ে যায়। আর ব্রিজের আশপাশে তদারকির দায়িত্ব রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তাছাড়া পৌরসভার কোন গাড়ি খুরুস্কুলের ব্রিজের পাশে ময়লা ফেলছে না। তারপর দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হবে।
এব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী আবদুর রহমান জানান, খুরুস্কুল ব্রিজের নিচের উভয়পাশ দখলের বিষয়ে মাসিক সভায় আলোচনা করা হবে। এরপর যৌথভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।